ইসরায়েল একটি ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকে অত্যন্ত সমৃদ্ধ দেশ। এটি তিনটি প্রধান ধর্মের পবিত্র স্থান হিসেবে পরিচিত, এবং এর বৈচিত্র্যময় ভূগোল, প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ, আধুনিক শহর এবং সমুদ্রসৈকত এক চমৎকার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা প্রদান করে। আমি যখন ইসরায়েল ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলাম, তখন আমার প্রধান লক্ষ্য ছিল দেশটির ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় গুরুত্ব অনুসন্ধান করা। সেই অভিজ্ঞতাগুলি সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চাই।
ভ্রমণ পরিকল্পনা
ইসরায়েল একটি ছোট দেশ হলেও এর পর্যটন স্থানগুলির সংখ্যা অনেক। এজন্য প্রথমেই পরিকল্পনা করা প্রয়োজন, কোথায় যাবেন, কী দেখতে চান, কোন সময় যাবে—এইসব বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। আমি ভ্রমণের জন্য কিছু প্রধান স্থান নির্ধারণ করেছিলাম, যেমন:
- জেরুজালেম: এটি ধর্মীয় এবং ঐতিহাসিক দিক থেকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর। এখানে রয়েছে ওয়েস্টার্ন ওয়াল, টেম্পল মাউন্ট, এবং পবিত্র সেন্ট সেভিয়র চার্চ।
- তেল আবিব: আধুনিক শহর, যা ইসরায়েলের বাণিজ্যিক কেন্দ্র। এখানকার সমুদ্রসৈকত এবং নাইটলাইফ খুবই জনপ্রিয়।
- নাজরেথ: এটি যিশুর জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
সেরা সময় ভ্রমণের জন্য
ইসরায়েল একটি মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের দেশ, যেখানে মরুভূমি এবং উপকূলীয় অঞ্চল একত্রিত হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া গ্রীষ্মকালে খুব গরম হতে পারে এবং শীতকালে বেশ ঠান্ডা হয়। তাই, আপনি যদি একটি আরামদায়ক এবং সুষম ভ্রমণের অভিজ্ঞতা চান, তবে সেরা সময়টি নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১. শীতকাল (নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি)
শীতকাল হলো ইসরায়েল ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়, বিশেষত যারা গরম থেকে মুক্তি পেতে চান। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত দেশটির আবহাওয়া মৃদু এবং আরামদায়ক থাকে। এই সময়ে তাপমাত্রা ১০°C থেকে ২০°C-এর মধ্যে থাকে, যা পর্যটকদের জন্য খুবই আরামদায়ক। শীতকালিন সময়ে আপনি জেরুজালেম এবং তেল আবিবের মতো শহরে ঘুরে বেড়াতে পারেন, যেখানে প্রচুর দর্শনীয় স্থান রয়েছে।
- জেরুজালেম: শীতকালে এখানকার তাপমাত্রা কম থাকে, যা আপনি দীর্ঘ সময় ধরে শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলি দেখতে পারেন। বিশেষ করে, ওয়েস্টার্ন ওয়াল এবং টেম্পল মাউন্ট পরিদর্শন করতে খুব সুবিধাজনক।
- তেল আবিব: শীতকালে তেল আবিবে আপনি সানস্ক্রিন ছাড়া সৈকতে স্নান করতে পারবেন এবং শহরের নাইটলাইফ উপভোগ করতে পারবেন।
২. গ্রীষ্মকাল (জুন থেকে আগস্ট)
গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বেশ গরম হয়ে ওঠে, বিশেষ করে মরুভূমির অঞ্চলে। তেল আবিব এবং ইলাতের মতো উপকূলীয় শহরগুলোতে গরম কালে হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকে। তবে, সমুদ্রসৈকত ও রাতের সময় গরম আবহাওয়ার মধ্যে তাজা বাতাস অনুভব করা যেতে পারে।
- তেল আবিব: গ্রীষ্মকালীন সময়ে তেল আবিবের সৈকতগুলো অনেক জনপ্রিয়। এখানে প্রচুর পর্যটক আসে এবং অনেক নাইট ক্লাব ও রেস্তোরাঁ খোলা থাকে। তবে, গরমের কারণে দিনে শহরের বাইরে খুব বেশি ঘোরাঘুরি করা কঠিন হতে পারে।
- ইলাত: গ্রীষ্মকালে আপনি ইলাতে সমুদ্রস্নান ও সানবাথিং উপভোগ করতে পারেন, তবে সুর্যের তীব্রতা এবং অতিরিক্ত গরমের কারণে যথাযথ সতর্কতা নিতে হবে।
৩. বসন্তকাল (মার্চ থেকে মে)
বসন্তকাল হলো ভ্রমণের জন্য সেরা সময়। এই সময়ে তাপমাত্রা ২০°C থেকে ২৫°C-এর মধ্যে থাকে, যা খুবই আরামদায়ক। প্রকৃতি এখানে সুন্দর এবং ফুলে ফুলে ভরে ওঠে, বিশেষ করে মরুভূমি অঞ্চলে যেখানে আপনি ফুলের মেলা দেখতে পারেন।
- বসন্তের সময়: জেরুজালেম, তেল আবিব, এবং নাজরেথের মতো জায়গাগুলো দেখতে অসাধারণ হয়ে ওঠে। আপনার ভ্রমণ হবে আরও আরামদায়ক এবং কম তাপমাত্রায়, ফলে দীর্ঘক্ষণ ঘুরে বেড়ানো সম্ভব।
৪. শরতকাল (সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর)
শরৎকালও একটি দুর্দান্ত সময়, যখন গ্রীষ্মের গরম শেষ হয়ে যায় এবং তাপমাত্রা কমে আসে। এই সময়ে দেশটির প্রাকৃতিক দৃশ্য খুব সুন্দর থাকে। বিশেষ করে মরুভূমি অঞ্চলের সৌন্দর্য আরও বেশি ফুটে ওঠে।
- শরৎকালে: আপনি ভ্রমণ করতে পারেন জেরুজালেমের ঐতিহাসিক স্থানগুলো, তেল আবিবের সৈকত বা ফিলিস্তিনি গ্রামে। তাপমাত্রা বেশ মৃদু থাকে এবং পর্যটন মৌসুমের বাইরে থাকার কারণে অনেক কিছু শান্ত ও নির্জন থাকে।
ভিসা ও ভ্রমণ নথি
ইসরায়েলে ভ্রমণের জন্য সাধারণত পর্যটকদের একটি ভিসার প্রয়োজন হয়। আমি যখন ইসরায়েল সফর করেছিলাম, তখন আমার জন্য পর্যটক ভিসা নিতে হয়েছিল।
বাংলাদেশ এবং ভারতের নাগরিকদের জন্য ভিসা
- বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য: বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ইসরায়েলে প্রবেশের জন্য ই-ভিসার ব্যবস্থা নেই। তাই আপনাকে ইসরায়েল দূতাবাসে গিয়ে ভিসা আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মধ্যে রয়েছে পাসপোর্ট, ভ্রমণ পরিকল্পনা, এবং অর্থনৈতিক সামর্থ্যের প্রমাণ।
- ভারতীয় নাগরিকদের জন্য: ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ইসরায়েলেও ভিসা গ্রহণের পদ্ধতি প্রায় একই। তবে ভারতীয়দের জন্য ইসরায়েলি ভিসা একটু সহজ হতে পারে, কারণ ভারতের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক ভাল। তেল আবিবের ভারতীয় দূতাবাসে আপনি ভিসা আবেদন করতে পারবেন।
ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া
ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করার আগে আপনার উচিত যাত্রার তারিখ এবং সমস্ত নথি প্রস্তুত রাখা। এছাড়াও, কিছু ভ্রমণ নিরাপত্তার দিক থেকেও ইসরায়েল কঠোর। নিরাপত্তা পরীক্ষা করার জন্য আপনাকে কিছু অতিরিক্ত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হতে পারে, বিশেষত যদি আপনার পাসপোর্টে অন্য কোনো দেশের ছাপ থাকে। তবে, যদি আপনি সমস্ত নথি সঠিকভাবে প্রস্তুত রাখেন, তবে ভিসা পাওয়া সহজ হতে পারে।
জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য
ইসরায়েল একটি ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকে অত্যন্ত সমৃদ্ধ দেশ, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্যবাহী স্থান, ধর্মীয় গুরুত্ব, এবং আধুনিক শহুরে জীবন একসাথে মিশে রয়েছে। আপনি যদি এই দেশটি ভ্রমণ করতে চান, তবে এখানে এমন কিছু জায়গা রয়েছে, যেগুলি অবশ্যই পরিদর্শন করা উচিত। আমি ইসরায়েলে ভ্রমণের সময় যে স্থানগুলোতে গিয়েছি, সেই অভিজ্ঞতার আলোকে এই গন্তব্যগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
১. জেরুজালেম (Jerusalem)
জেরুজালেম, ইসরায়েলের প্রাচীনতম শহর এবং তিনটি প্রধান ধর্মের পবিত্র শহর—ইসলাম, খ্রিস্টান এবং ইহুদি ধর্মের। শহরটি একটি ঐতিহাসিক কেন্দ্র, যেখানে আপনি দেখতে পাবেন ধর্মীয় স্থান, মন্দির, মসজিদ এবং গির্জা। এটি এমন একটি স্থান যেখানে প্রত্যেকটি কোণেই এক একটি আলাদা ইতিহাস এবং অর্থ রয়েছে।
- ওয়েস্টার্ন ওয়াল (Western Wall): এটি ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র স্থান। এটি প্রাচীন মন্দিরের অংশ এবং এখানে প্রার্থনা করার জন্য হাজার হাজার ভক্ত আসে।
- টেম্পল মাউন্ট (Temple Mount): এখানে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ এবং গোল্ডেন ডোম গির্জা, যা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র।
- হোলি সেপুলক্র (Holy Sepulchre): খ্রিস্টানদের জন্য পবিত্র স্থান, যেখানে খ্রিস্টের মরণের পরের ঘটনা ঘটেছিল। এখানে খ্রিস্টানদের এক্সক্লুসিভ ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া, জেরুজালেমের পুরোনো শহর এবং তার আশপাশের এলাকা যেমন ইহুদি কোয়াটার, মুসলিম কোয়াটার, খ্রিস্টান কোয়াটার—এসব জায়গাও আপনার দেখা উচিত।
২. তেল আবিব (Tel Aviv)
তেল আবিব, ইসরায়েলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং প্রধান বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এটি আধুনিক শহরের জীবনযাত্রা এবং ঐতিহ্যবাহী পুরোনো স্থাপনার এক অসাধারণ মিশ্রণ। এখানে সৈকত, রেস্তোরাঁ, নাইটলাইফ এবং বাজারের অভিজ্ঞতা অনবদ্য।
- তেল আবিব বিচ (Tel Aviv Beach): শহরের অন্যতম জনপ্রিয় স্থল এটি, যেখানে আপনি সূর্যস্নান করতে পারবেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে মেলামেশা করতে পারবেন।
- ন্যাশনাল মিউজিয়াম (Eretz Israel Museum): ইসরায়েলের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ও শিল্পের চমৎকার সংগ্রহস্থল। এখানকার প্রদর্শনীগুলি খুবই শিক্ষণীয়।
- নেভি শানান (Neve Tzedek): এটি তেল আবিবের পুরোনো অঞ্চল, যেখানে আপনি সুন্দর ঐতিহ্যবাহী বাড়িঘর এবং গ্যালারি দেখতে পাবেন।
৩. ইলাত (Eilat)
ইলাত হলো ইসরায়েলের একমাত্র উপকূলীয় শহর যা লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত। এটি এমন একটি গন্তব্য যেখানে আপনি সমুদ্রস্নান, স্কুবা ডাইভিং এবং সামুদ্রিক ক্রীড়া উপভোগ করতে পারবেন।
- ইলাত বিচ (Eilat Beach): ইলাতের সৈকত অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন এবং আরামদায়ক। এটি আদর্শ স্থান যাতে আপনি সানবাথিং এবং সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারবেন।
- আকাবা সি (Aqaba Sea): এখানে স্কুবা ডাইভিং এবং স্নোর্কেলিং করার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। লোহিত সাগরের তলদেশে রঙিন মাছ এবং প্রবাল দ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে।
৪. নাজারেথ (Nazareth)
নাজারেথ, খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি পবিত্র শহর। এটি খ্রিস্টের জন্মস্থানের কাছাকাছি অবস্থিত এবং এখানে অনেক ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় স্থানের দেখা মেলে।
- ন্যাজারেথের গির্জা (Basilica of the Annunciation): এটি বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খ্রিস্টান গির্জাগুলোর একটি। এখানে বিশ্বাস করা হয় যে, গ্যাব্রিয়েল রূপী দেবদূত মেরীকে যিশুর জন্মের বার্তা দিয়েছিলেন।
- ডোমিটিলিয়া গির্জা (Church of St. Joseph): এটি খ্রিস্টের পিতামাতা সেন্ট জোসেফের সাথে সম্পর্কিত।
৫. মাসাদা (Masada)
মাসাদা হল একটি প্রাচীন দুর্গ যা ইসরায়েলের মৃত সাগরের দক্ষিণের উপকূলে অবস্থিত। এটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভুক্ত এবং একটি ইতিহাসিক স্থান যা বিশেষ করে রোমানদের সঙ্গে ইহুদিদের লড়াইয়ের জন্য বিখ্যাত।
- মাসাদা ফোর্ট্রেস (Masada Fortress): এখানে উঠে যাওয়ার জন্য একটি সান্ধ্য ট্যুর বা ক্যাবল কার ব্যবহার করা যেতে পারে। দুর্গের শীর্ষ থেকে মনোরম দৃশ্য দেখতে পারবেন।
- মৃত সাগর: এটি পৃথিবীর সবচেয়ে নিম্নতম স্থান এবং এখানে আপনি তার পবিত্র জলরাশি উপভোগ করতে পারবেন। মৃত সাগরে ভাসমান অবস্থায় আপনি খুব অদ্ভুত অভিজ্ঞতা পাবেন।
৬. আক্কো (Acre)
আক্কো একটি ঐতিহাসিক শহর যা তেল আবিবের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। এটি এক ধরনের সংস্কৃতির মেলবন্ধন, যেখানে আপনি পুরোনো বাজার, দুর্গ এবং ধর্মীয় স্থাপনা দেখতে পাবেন।
- আক্কো ফোর্ট (Acre Fort): এটি একাধিক ঐতিহাসিক সামরিক স্থাপনার সমন্বয়ে গঠিত। এখানে আপনি পুরোনো কাঠামো এবং প্রতিরক্ষা সিস্টেম দেখতে পাবেন।
- আক্কো বাজার: এই ঐতিহ্যবাহী বাজারে আপনি নানা ধরনের রঙিন ও সুগন্ধি মসলার দোকান, পোশাক এবং অন্যান্য হস্তশিল্প পণ্য পাবেন।
৭. হাইফা (Haifa)
হাইফা ইসরায়েলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর, যা উপকূলীয় শহর। এখানকার বাগান এবং তিল গাইভ পার্কগুলি দর্শনীয়।
- বাহাই গার্ডেন্স (Baha’i Gardens): বাহাই ধর্মাবলম্বীদের জন্য এই বাগান একটি পবিত্র স্থান, যা হাইফার অন্যতম বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র।
৮. ডেড সি (Dead Sea)
ডেড সি পৃথিবীর সবচেয়ে নিম্নতম স্থান এবং এখানে আপনি ভাসমান অবস্থায় অবস্থিত থাকবেন। এটি সম্পূর্ণ বিশ্রামের জন্য এবং চর্ম চিকিৎসার জন্য বিখ্যাত। এখানে যাত্রা করলে আপনি অনেক ধরনের রিল্যাক্সেশন এবং স্বাস্থ্য সুবিধা পাবেন।
পরিবহন ব্যবস্থাপনা
ইসরায়েল একটি অত্যন্ত উন্নত দেশের মধ্যে অন্যতম, এবং এর পরিবহন ব্যবস্থা খুবই সহজ এবং আধুনিক। শহরগুলোর মধ্যে যাতায়াত করা খুবই সুবিধাজনক। যদি আপনি ইসরায়েল ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন, তবে আপনাকে কিছু মূল পরিবহন ব্যবস্থা সম্পর্কে জানানো খুবই জরুরি, যাতে আপনার যাত্রা আরও আরামদায়ক হয়।
১. ট্যাক্সি এবং ক্যাব
ইসরায়েলে ট্যাক্সি বা ক্যাব ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে, বিশেষ করে শহরের অভ্যন্তরে বা উপকূলীয় অঞ্চলে। ট্যাক্সি সহজেই পাওয়া যায় এবং এতে আপনি দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছাতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, ট্যাক্সি ফি নির্ধারিত থাকে, এবং কিছু শহরে রেট নির্ধারিত না থাকলে, আপনার আগে থেকে দাম সম্পর্কে আলোচনা করে নেওয়া ভাল।
২. বিবি বাস (Egged Bus)
ইসরায়েলের বৃহত্তম বাস পরিষেবা প্রদানকারী কোম্পানি হল এগেড (Egged)। এই বাসগুলি দেশব্যাপী বেশিরভাগ জায়গায় চলে এবং পর্যটকদের জন্য একটি সস্তা এবং সুবিধাজনক পরিবহন ব্যবস্থা। এছাড়া, বাসগুলি তেল আবিব, জেরুজালেম, হাইফা, এবং অন্যান্য বড় শহরগুলোর মধ্যে সারা দিনে একাধিক শিডিউলে চলাচল করে।
৩. ট্রেন সেবা
ইসরায়েলে উচ্চ গতি সম্পন্ন ট্রেন পরিষেবা রয়েছে যা শহরগুলির মধ্যে দ্রুত যাতায়াতের সুবিধা প্রদান করে। এর মধ্যে ইসরায়েল রেলওয়ে (Israel Railways) প্রধান ট্রেন পরিষেবা যা তেল আবিব, জেরুজালেম, হাইফা, এবং আরও অন্যান্য শহরে যাতায়াতের সুযোগ প্রদান করে। ট্রেনগুলি খুবই পরিষ্কার এবং আধুনিক, তাই দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য এটি একটি ভালো অপশন হতে পারে।
৪. সাইকেল ভাড়া
তেল আবিবের মতো শহরগুলোতে সাইকেল ভাড়া নিয়ে শহরটা অন্বেষণ করার সুবিধা রয়েছে। শহরের বেশিরভাগ এলাকায় সাইকেল পথ রয়েছে এবং আপনি সাইকেল ভাড়া করতে পারবেন, যা একটি সুস্থ, পরিবেশবান্ধব এবং সস্তা উপায়।
৫. ক্রেডিট কার্ড এবং নগদ অর্থ
ইসরায়েল জুড়ে অধিকাংশ স্থানে ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করা হয়, তবে কিছু জায়গায় নগদ অর্থ ব্যবহার করাই ভাল। শহরের ছোট ছোট দোকান বা বাজারে কার্ড ব্যবহার করা কঠিন হতে পারে, তাই কিছু নগদ অর্থ সঙ্গে রাখা উচিত।
স্থানীয় খাবার এবং অভিজ্ঞতা
ইসরায়েল একটি খাবারের স্বর্গ। এখানে আপনি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের প্রভাবিত খাবারগুলি একসাথে উপভোগ করতে পারবেন, তবে দেশটির নিজস্ব কিছু খাবার রয়েছে যা আপনাকে মিস করা উচিত নয়।
১. হুমাস (Hummus)
হুমাস হল ইসরায়েলি খাবারের একটি আইকনিক অংশ। এটি তৈরি করা হয় মিষ্টি মসুর ডাল, তিলের তেল, লেবু, রসুন এবং জলপাই তেল দিয়ে। সাধারণত এটি পিত্জা, পিটা ব্রেড বা তাজা সবজির সাথে পরিবেশন করা হয়। দেশের প্রতিটি রেস্টুরেন্টে এটি পাওয়া যাবে এবং এটি খেতে খুবই সুস্বাদু।
২. ফালাফেল (Falafel)
ফালাফেল ইসরায়েলের খুব জনপ্রিয় একটি খাবার। এটি মসুর ডাল এবং অন্যান্য মশলা দিয়ে তৈরি ছোট ছোট বল আকারে ভাজা হয়। এটি সাধারণত পিটা ব্রেডের মধ্যে সাজিয়ে খাওয়া হয়। আপনি যখন রাস্তায় হাঁটবেন, তখন ফালাফেল স্ট্রিট ফুডের আকারে প্রায় সবখানে পাবেন।
৩. শশুকা (Shakshuka)
শশুকা একটি ইসরায়েলি ব্রেকফাস্ট খাবার, যা টমেটো, মিষ্টি মরিচ এবং মশলা দিয়ে তৈরি করা হয়। এর মধ্যে ডিম ভেঙে দেওয়া হয় এবং এটি সাদা পিটা ব্রেডের সঙ্গে খাওয়া হয়। এটি একটি খুব জনপ্রিয় খাবার এবং সকালবেলায় রেস্টুরেন্টে বা ক্যাফেতে সহজেই পাওয়া যায়।
৪. বাবা গানুশ (Baba Ghanoush)
বাবা গানুশ হলো একটি সস, যা বিশেষ করে ভর্তা করা ব্যানানার তিল দিয়ে তৈরি হয়। এটি পিটা ব্রেডের সাথে পরিবেশন করা হয় এবং সাধারণত হুমাসের সাথেও পরিবেশন করা হয়। এটি একটি মুখরোচক খাবার এবং এখানকার রাস্তায় সহজেই পাওয়া যায়।
৫. কনফিট (Kebabs)
ইসরায়েলে কনফিট খাওয়ার অভিজ্ঞতাও অত্যন্ত মজাদার। কনফিট হল গ্রিলড মাংস বা মাংসের কিউব, যা বিভিন্ন মশলায় মাখিয়ে গ্রিল করা হয়। এটি সাধারণত চাল, সালাদ এবং পিটা ব্রেডের সাথে পরিবেশন করা হয়।
৬. ইসরায়েলি স্যালাড (Israeli Salad)
ইসরায়েলি স্যালাড হল তাজা শাকসবজি যেমন শশা, টমেটো, গাজর, সেলারি এবং লেবুর রস দিয়ে তৈরি একটি সালাদ। এটি অনেক সময় খাওয়ার আগে সাজানো হয় এবং এটি স্বাস্থ্যকর ও তাজা।
কেনাকাটা ও স্থানীয় বাজার
ইসরায়েল এমন একটি স্থান যেখানে শপিং-এর অনেক অপশন রয়েছে। আপনি যদি ইসরায়েলি প্রোডাক্ট বা হস্তশিল্পের কিছু কেনাকাটা করতে চান, তবে দেশের বাজারগুলোতে ঘুরে দেখতে পারেন।
১. মাহনে ইয়াুহুদা মার্কেট (Mahane Yehuda Market), জেরুজালেম
এটি জেরুজালেমের সবচেয়ে বিখ্যাত বাজার এবং এখানকার রঙিন পরিবেশ, সুগন্ধি মসলার দোকান এবং তাজা খাবার আপনাকে আকৃষ্ট করবে। এই বাজারে আপনি পছন্দসই সুগন্ধি মশলা, ফলমূল, শুস্ক মাংস, ক্যান্ডি, এবং হস্তশিল্পের পণ্যও পেতে পারেন।
২. কারমেল মার্কেট (Carmel Market), তেল আবিব
কারমেল মার্কেট তেল আবিবের একটি অন্যতম জনপ্রিয় বাজার, যেখানে আপনি নতুন সবজি, ফল, পোশাক, গহনা, এবং অনেক ধরনের দ্রব্য পাবেন। এখানে গরম খাবারের স্টলও আছে এবং আপনি ইসরায়েলের খাবারের সেরা স্বাদ এখান থেকে পাবেন।
৩. হের্ব সেন্টার (Herb Centre), তেল আবিব
এটি এমন একটি স্থান যেখানে আপনি স্থানীয় জর্দানীয়, ইসরায়েলি, এবং মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঔষধি উপাদান কিনতে পারবেন। এছাড়া এখানে আপনি তাজা মশলা, তিল, এবং বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনীও পাবেন।
৪. চাকা (Chakra), হাইফা
হাইফার অন্যতম পরিচিত বাজার চাকা, যেখানে আপনি ইসরায়েলি হস্তশিল্প, পোশাক এবং শিল্পকর্মের বিভিন্ন ধরণের প্রোডাক্ট কিনতে পারবেন।
ভাষা, সংস্কৃতি ও রীতি-নীতি
ইসরায়েল, মধ্যপ্রাচ্যের একটি অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় দেশ, যেখানে নানা ধর্ম, সংস্কৃতি ও জাতির সংমিলন ঘটেছে। এখানে ভ্রমণের সময় ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক রীতিনীতি সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আপনি স্থানীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারেন এবং তাদের জীবনযাত্রা ও ঐতিহ্যকে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন।
ভাষা
ইসরায়েলের দুইটি সরকারি ভাষা রয়েছে: হিব্রু এবং আরবি। তবে, হিব্রু ভাষা দেশের প্রধান ভাষা এবং অধিকাংশ সরকারি, শিক্ষাগত ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম হিব্রু ভাষায় পরিচালিত হয়। ইংরেজি ভাষাও অনেক জনপ্রিয়, বিশেষত শহরগুলোর মধ্যে এবং পর্যটন এলাকায়। তেল আবিব, জেরুজালেম, এবং হাইফা শহরে ইংরেজি সাইনবোর্ড এবং নির্দেশনা খুবই সাধারণ, তাই ভাষা সমস্যার কোনও তেমন সমস্যা হয় না।
১. হিব্রু (Hebrew)
হিব্রু ভাষা ইসরায়েলের মূল ভাষা এবং এটি আরবী ভাষার পরিবারের অন্তর্গত। এটি ইসরায়েলের অধিকাংশ লোকের মাতৃভাষা এবং তাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত হয়। হিব্রু ভাষার লিখন পদ্ধতি ডান থেকে বামে হয়, এবং এখানে আলফাবেটের ২২টি অক্ষর থাকে।
২. আরবি (Arabic)
আরবি ভাষা ইসরায়েলের দ্বিতীয় সরকারি ভাষা। যদিও আরবি ভাষী জনগণের সংখ্যা হিব্রু ভাষী জনগণের তুলনায় কম, তবে তারা বিশেষত উত্তর ইসরায়েল এবং জেরুজালেম এলাকায় বসবাস করে। স্থানীয় বাজার, মসজিদ এবং ছোট শহরগুলোতে আরবি ভাষায় বেশিরভাগ কথোপকথন হয়।
৩. ইংরেজি (English)
ইংরেজি ভাষাও ইসরায়েলে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, বিশেষত পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে। হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং ট্যুর গাইডরা ইংরেজি জানে, এবং বেশিরভাগ সাইনবোর্ড এবং নির্দেশিকাগুলো ইংরেজিতে থাকে। তেল আবিব, জেরুজালেম, এবং অন্যান্য বড় শহরে ইংরেজি জানা মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি।
সংস্কৃতি
ইসরায়েলি সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ এবং বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক প্রভাবের সংমিশ্রণ। ইহুদি, মুসলিম, খ্রিস্টান এবং ড্রুজ (Druze) সম্প্রদায়সহ একাধিক ধর্মীয় এবং জাতিগত গোষ্ঠী এখানে বাস করে, যার ফলে ইসরায়েলের সংস্কৃতির মধ্যে একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ রূপ ফুটে ওঠে।
১. ইহুদি সংস্কৃতি
ইসরায়েলের প্রায় ৭০% জনগণ ইহুদি এবং তাদের সংস্কৃতি দেশটির মূল ভিত্তি গড়ে তোলে। ইহুদি সম্প্রদায়ের মূল ঐতিহ্য এবং আচার-আচরণগুলি ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও ছুটির দিনে প্রতিফলিত হয়, যেমন রোশ হাশানাহ, ইউম কিপুর এবং হানুক্কা। এছাড়া, শাবাত (Shabbat) বা সাপ্তাহিক বিশ্রামের দিনও ইহুদি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
২. মুসলিম সংস্কৃতি
ইসরায়েলের মুসলিম জনগণ প্রধানত আরব। তারা অধিকাংশ সময়ে ইসলামিক রীতিনীতি পালন করে এবং রমজান মাসে রোজা রাখে। মক্কা এবং মদিনা, ইসলামের পবিত্র স্থানগুলির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো তাদের ধর্মীয় কর্তব্য। তারা প্রায়ই ইসলামের অন্যান্য উৎসব এবং ছুটির দিন পালন করে, যেমন ইদ-উল-ফিতর এবং ইদ-উল-আজহা।
৩. খ্রিস্টান সংস্কৃতি
ইসরায়েলের খ্রিস্টান জনগণ ছোট একটি গোষ্ঠী, তবে তারা প্রধানত জেরুজালেম, বেথলেহেম এবং নাজরত এলাকায় বসবাস করে। খ্রিস্টানরা ইস্টার, ক্রিসমাস এবং অন্যান্য খ্রিস্টীয় ছুটি পালন করে। জেরুজালেমের চালি পাথ (Via Dolorosa) এবং জ্ঞানী পাথ (Church of the Holy Sepulchre) খ্রিস্টানদের পবিত্র স্থান।
৪. ড্রুজ সংস্কৃতি
ড্রুজ ধর্মের অনুসারী মানুষ ইসরায়েলের একটি জাতিগত গোষ্ঠী যারা নিজেদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বজায় রেখেছে। তারা বিশেষ করে গালিলি অঞ্চলে বাস করে এবং তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির একটি আলাদা চিহ্ন বহন করে।
৫. শিল্প এবং সঙ্গীত
ইসরায়েলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড যেমন গান, নৃত্য, শিল্প এবং থিয়েটারের প্রতি গভীর আগ্রহ রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের সঙ্গীত, বিশেষত ক্লাসিকাল, জ্যাজ এবং ফোক সঙ্গীতের প্রচলন রয়েছে। ইসরায়েলি সিনেমা এবং নৃত্য ক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে।
রীতি-নীতি
ইসরায়েলের সমাজের কিছু রীতি-নীতি এবং সামাজিক আচরণ সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ। যদিও ইসরায়েল একটি আধুনিক এবং উন্নত দেশ, তবে কিছু রীতি-নীতি রয়েছে যা ভ্রমণকারীদের জন্য জানা উচিত।
১. শাবাত (Shabbat)
ইহুদি ধর্মের অনুসারীরা শাবাত (শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত) পালন করে। এই সময় দেশের বেশিরভাগ ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকে, এবং রেস্টুরেন্ট, ট্রেন এবং বাসের পরিষেবা সীমিত হতে পারে। শাবাতের সময় শহরগুলো অনেকটাই শান্ত থাকে, তবে আপনি যদি এ সময় ইসরায়েল ভ্রমণ করেন, তবে শাবাতের পূর্বের প্রস্তুতি নেয়া উচিত।
২. ধর্মীয় স্থানসমূহে শ্রদ্ধা
ইসরায়েলে ধর্মীয় স্থানসমূহ যেমন মসজিদ, গির্জা এবং পবিত্র স্থানগুলিতে প্রবেশের সময় শ্রদ্ধা প্রদর্শন অত্যন্ত জরুরি। এই স্থানগুলিতে সাধারণত সুশৃঙ্খল পোশাক পরা এবং শব্দের প্রতি সতর্ক থাকতে বলা হয়। যদি আপনি ইহুদি বা খ্রিস্টান ধর্মীয় স্থানসমূহে যান, তাদের ঐতিহ্য এবং আচরণ অনুযায়ী চলুন।
৩. প্রথম সাক্ষাতের সময়ে পরিচিতি
ইসরায়েলে সাধারণত বন্ধুর সাথে দেখা করার সময় হাত মেলানো একটি প্রথা। তবে, মহিলাদের জন্য এটি কিছুটা ভিন্ন হতে পারে, এবং তারা প্রায়ই একে অপরকে আলিঙ্গন না করে শুধুমাত্র হালকা হাত মেলানো পছন্দ করে।
৪. খাবারের টেবিলে আচরণ
ইসরায়েলে খাবার পরিবেশন একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়। খাবারের সময় গৃহস্থরা তাদের অতিথিদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে সময় কাটান এবং সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সাধারণত খাবারের পরে চা বা কফি পান করা হয়, এবং খাবারের সময় পুরোপুরি শরীর এবং মন দিয়ে উপভোগ করা উচিত।
ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা
- নিরাপত্তা: ইসরায়েল নিরাপত্তার জন্য কিছু কড়া নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে। নিরাপত্তা পরীক্ষা এবং গেটচেকিং সাধারণ নিয়ম।
- আবহাওয়া: গ্রীষ্মে ইসরায়েলে খুব গরম হতে পারে, তাই পর্যাপ্ত পানি সঙ্গে রাখুন এবং সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
- স্থানীয় রীতি: ইসরায়েলে অনেক ধর্মীয় স্থান রয়েছে, তাই সেসব স্থান পরিদর্শন করার সময় আপনার পোশাক এবং আচরণ যথাযথ রাখুন।
ইসরায়েল একটি অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ দেশ। এখানে প্রতিটি স্থান একটি নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান করে, যা একবার ভ্রমণ করলে জীবনের অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করে। বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে ইসরায়েল ভ্রমণ করা খুবই সহজ, তবে সঠিক পরিকল্পনা, ভিসা প্রস্তুতি এবং পরিবহন ব্যবস্থার বিষয়ে আগাম জানা প্রয়োজন।